News
Title | : | সিপিটিইউ থেকে ই-জিপি সম্পর্কে ধারণা নিলেন মিসরের সরকারি ক্রয় বিষয়ক কর্মকর্তাগণ |
---|---|---|
Description | : | গত ৭ মার্চ ২০২৩ তারিখে মিসরের সরকারি ক্রয় বিষয়ক একটি প্রতিনিধিদল বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) প্রবর্তিত ই-জিপি সিস্টেম সম্পর্কে জানতে দুই দিনের বাংলাদেশ সফর শেষ করেছে। বাংলাদেশে সরকারি ক্রয় ব্যবস্থার সংস্কার এবং ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) সিস্টেম সম্পর্কে জানতে ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা সিপিটিইউ পরিদর্শন করেছে। মিসরীয় প্রতিনিধি দল আসার আগে সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বর মাসে রিপাবলিক অব মোজাম্বিকের এ ধরনের একটি দল সিপিটিইউ পরিদর্শন করেছে। মিসর থেকে আসা চার সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিশ্বব্যাংকের প্রকিউরমেন্ট স্পেশালিস্ট লিনা আব্বাসী। তিনি মূলত ইরাকের বাগদাদে কাজ করেন। প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন মিশরের সরকারি ক্রয় বিষয়ক কমকর্তা মোহামেদ ওসামা, নোহা তাহের জাহের, মোহামেদ আরেফ এবং আহমেদ সাদ। তারা দুইদিনের সফরকালে সিপিটিইউতে ই-জিপির বিভিন্ন বিষয়ে বেশ কিছু লার্নিং সেশনে অংশ নেন। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা তাদের দেশে ই-জিপি বাস্তবায়নের বিষয়ে নিজেদের ভাবনাগুলো তুলে ধরেন। মিসরও ই-জিপি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বর্তমানে সেখানে শুধুমাত্র দরপত্রের বিজ্ঞপ্তিগুলো অনলাইনে দেওয়া হয়। কিন্তু বাকি কাজগুলো ম্যানুয়ালিই করা হয়। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা গত ৬ মার্চ এলজিইডি পরিদর্শনেও যান। এলজিইডি তার ক্রয়ে শতভাগ ই-জিপি বাস্তবায়ন করেছে। গত ৭ মার্চ মিসরের প্রতিনিধিদল সিপিটিইউর সম্মেলন কক্ষে আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় আইএমইডি সচিব বাংলাদেশে ই-জিপির সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ই-জিপি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মিসরের কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেবে আইএমইডি এবং সিপিটিইউ। লার্নিং সেশনে সভাপতিত্ব করেন সিপিটিইউর মহাপরিচালক মো. শোহেলের রহমান চৌধুরী। বাংলাদেশের সরকারি ক্রয় ব্যবস্থা সম্পর্কে একটি উপস্থাপনাও দেন তিনি। সিপিটিইউর পরিচালক মাসুদ আকতার খান সরকারি ক্রয় বিষয়ে যোগাযোগ ও নাগরিক সম্পৃক্ততা এবং পরিচালক মো. শামীমুল হক ই-জিপি এবং সিপিটিউর প্রকল্প বাস্তবায়ন বিষয়ে উপস্থাপনা পেশ করেন। সিপিটিইউর সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট মো. মোশাররফ হোসেন তাঁর উপস্থাপনায় বাংলাদেশের ই-প্রকিউরমেন্ট সিস্টেমের বিভিন্ন দিক জানান। তিনি ই-জিপি সিস্টেম কীভাবে ব্যবহার করা হয় সেটি দেখান। পাশাপাশি এর টেকসই ব্যবস্থাপনা ও আপগ্রেডেশনের বিষয়গুলোও তুলে ধরেন। দোহাটেক নিউ মিডিয়ার ডেপুটি টিম লিডার ও সিনিয়র ডাটাবেইজ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর নাজমূল ইসলাম ভূইয়া ই-জিপি সিস্টেমের ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট ও ডেপ্লয়মেন্ট বিষয়ে কথা বলেন। সিপিটিউর সিনিয়র আইটি সিকিউরিটি এসিউরেন্স কনসালট্যান্ট আসাদ ইবনে মঈন ই-জিপির নিরাপত্তা এবং সিনিয়র ই-জিপি এডভাইজর আশফাকুল ইসলাম ই-জিপি সম্পর্কিত ভবিষ্যৎ ভাবনাগুলো নিয়ে আলাদা উপস্থাপনা দেন। গত ৬ থেকে ৭ মার্চ পর্যন্ত মিসরের প্রতিনিধিদলের দুইদিনব্যাপী এই পরিদর্শন কর্মসূচি আয়োজন করা হয় বিশ্বব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায়। ডিজিটাইজিং ইমপ্লেমেন্টেশন মনিটরিং অ্যান্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট প্রজেক্ট (ডাইম্যাপ) বাস্তবায়নে সিপিটিইউকে কারিগরি সহায়তা দিয়ে আসছে বিশ্বব্যাংক। সিপিটিউতে পরিদর্শন ও বিভিন্ন আলোচনায় মিসরের প্রতিনিধি দলটির সঙ্গে ছিলেন বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের লিড প্রকিউরমেন্ট স্পেশালিস্ট আহসান আলী এবং সিনিয়র প্রকিউরমেন্ট স্পেশালিস্ট ও ডাইম্যাপের টাস্ক টিম লিডার মোস্তাফিজুর রহমান। এই পরিদর্শন কর্মসূচির সার্বিক উদ্দেশ্য ছিল- মিসরে ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সেখানকার সরকারি ক্রয় কর্মকর্তাদের প্রাতিষ্ঠানিক ও কারিগরি দক্ষতা বাড়ানোর জন্য অভিজ্ঞতা বিনিময়। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বাংলাদেশের ই-জিপি সিস্টেমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সরকারি ক্রয় ব্যবস্থা ডিজিটালাইজড করার জন্য প্রয়োজনীয় ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট, বাস্তবায়ন ও তা টেকসই করার বিষয়ে বাংলাদেশের কাছ থেকে শিক্ষা ও পরামর্শ নেওয়াই ছিল মিসরের প্রতিনিধি দলের এই সফরের সুর্নির্দিষ্ট লক্ষ্য। ২০১১ সাল থেকে সিপিটিইউ ই-জিপি বাস্তবায়ন করে আসছে। সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়া ও চুক্তি ব্যবস্থাপনা পুরোপুরি ডিজিটালাইজড করতে গত কয়েক বছরে ই-জিপি সিস্টেমে সম্প্রতি নতুন বেশ কিছু সুবিধা যুক্ত করেছে সিপিটিইউ। পণ্য ক্রয়ে ই-জিপি সিস্টেমে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান শুরু হয়েছে। চালু করা হয়েছে ইলেক্ট্রনিক কন্ট্রাক্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ই-সিএমএস)। সেই সঙ্গে ই-অডিট ম্যানুয়েল এবং অনলাইন টেন্ডারার্স ডাটাবেইজও তৈরি করেছে সিপিটিইউ। এ পর্যন্ত ই-জিপি সিস্টেমে প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ২০১১ সাল থেকে এ পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি দরদাতা এবং ১৪২৭ টি ক্রয়কারী সংস্থা ই-জিপি সিস্টেমে নিবন্ধন করেছে। ২০১১ সালের ২ জুন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ই-জিপি পোর্টালের উদ্বোধন করেন। ইলেক্ট্রনিক প্রকিউরমেন্টের ক্ষেত্রে বর্তমানে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশকে নেতৃস্থানীয় বলে বিবেচনা করা হয়। সরকারি ক্রয়ে এসডিজি অর্জনের বিষয়েও কাজ করছে সিপিটিইউ। ইতোমধ্যে ডাইম্যাপের আওতায় একটি সাসটেইনেবল প্রকিউরমেন্ট পলিসির (এসপিপি) খসড়া তৈরি করা হয়েছে। সরকারি ক্রয় পদ্ধতি শক্তিশালী করতে সাম্প্রতিক সময়ে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে মিসরও। বিশেষ করে ২০১৮ সালে তারা পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন করেছে, যার উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারি ব্যয়ে দক্ষতা ও সুশাসন বাড়ানো। ইলেকট্রনিক প্রকিউরমেন্ট সিস্টেম চালু করতে দেশটির সরকার কোরিয়ান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির সঙ্গে কাজ করছে। দক্ষ, স্বচ্ছ ও আধুনিক সরকারি ক্রয় ব্যবস্থার অন্যতম স্তম্ভ এই ইলেকট্রনিক পাবলিক প্রকিউরমেন্ট ব্যবস্থা চালু করতে বিশ্বব্যাংক মিসরকে সহায়তা করছে। তবে এর ডিজাইন, ডেভেলপমেন্ট ও বাস্তবায়নে নানা চ্যালেঞ্জও রয়েছে।
|
Publication Date | : | 12/03/2023 |