Bangladesh Public Procurement Authority

বিপিপিএ সস্পর্কে

02/12/2024 12:00 AM

about bppa

বর্তমানে সরকারি ক্রয়ে বছরে প্রায় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় যা জাতীয় বাজেটের প্রায় ৪৫ শতাংশ এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) প্রায় ৮৫ শতাংশ। এ বিপুল পরিমাণ অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং দক্ষতা আনয়নের জন্য ১৯৯৯ সালে সরকারি ক্রয়ে সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

১৯৯৯ সালে বিশ্ব ব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহযোগিতায় সরকার "কান্ট্রি প্রকিউরমেন্ট অ্যাসেসমেন্ট স্টাডি" হাতে নেয়। এর ভিত্তিতে ২০০১ সালে প্রকাশিত হয় "কান্ট্রি প্রকিউরমেন্ট অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট" (CPAR)রিপোর্টে প্রাতিষ্ঠানিক, আইনগত ও সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুপারিশ উঠে আসে।

এই রিপোর্টের সুপারিশের আলোকে, ২০০২ সালে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)-তে সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০০৩ সালে "পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রেগুলেশনস ২০০৩" জারি হয় এবং একই সাথে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তাদের ও দরপত্রদাতাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ শুরু হয়।

২০০৬ সালে জাতীয় সংসদে "পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট ২০০৬" পাস হয়। এই আইনের অধীন ২০০৮ সালে "পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস ২০০৮" প্রণীত হয়। আইন ও বিধিমালা উভয়ই ২০০৮ সালে কার্যকর করা হয়। ২০১১ সালের ২ জুন ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) পোর্টাল চালু করা হয়, যা সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়া আধুনিক ও স্বচ্ছ করে তুলেছে।

বিপিপিএ’তে রূপান্তরিত হয়েছে পূর্বতন সিপিটিইউ

ই-জিপি সিস্টেমের অভূতপূর্ব সাফল্যের সাথে সাথে প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ এবং ক্রয় ব্যবস্থাপনায় পেশাদারিত্বের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পায়। সিপিটিইউ-এর সীমিত জনবল ও বিদ্যমান সক্ষমতা এই চাহিদা পূরণে যথেষ্ট ছিল না। এ পরিপ্রেক্ষিতে, সিপিটিইউকে  একটি কর্তৃপক্ষ হিসেবে রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

২০১৭ সালে বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় "ডিজিটাইজিং ইমপ্লিমেন্টেশন মনিটরিং অ্যান্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (DIMAPP) প্রকল্প শুরু হয়। এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল সিপিটিইউ -কে একটি আধুনিক কর্তৃপক্ষে রূপান্তর করা।

২০২৩ সালের ৫ জুলাই "বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি বিল ২০২৩" জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয় এবং ১০ সেপ্টেম্বর বিলটি পাশের পর মহামান্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে এটি আইনে পরিণত হয়। এরপর, ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর বিপিপিএ-এর প্রথম প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ এবং ৭ ডিসেম্বর ২০২৩ সালে বিপিপিএ বোর্ডের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিপিপিএ এখন সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও দক্ষতা নিশ্চিতকরণ এবং টেকসই সরকারি ক্রয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে। সরকারি ক্রয় ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে বিপিপিএ টেকসই সরকারি ক্রয় নীতি এবং আধুনিক প্রযুক্তি বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।

অথরিটির পরিচালনা:

বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি’র কার্যালয় ঢাকায়। এর সাধারণ পরিচালনা ও প্রশাসন পরিচালনা পর্ষদের ওপর ন্যস্ত। অথরিটি যেসব ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যসম্পাদন করতে পারে পরিচালনা পর্ষদ সেসব ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যসম্পাদন করতে পারে।

পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী। মাননীয় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এর সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব সহ-সভাপতি। অর্থ বিভাগ, পরিকল্পনা বিভাগ, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ কর্তৃক একজন করে মনোনীত অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার প্রতিনিধি; ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) কর্তৃক মনোনীত একজন প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অন্যূন যুগ্মসচিব পদমর্যাদার একজন প্রতিনিধি এর সদস্য এবং বিপিপিএ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এর সদস্য-সচিব।

পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি পর্ষদের সভায় সভাপতিত্ব করেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে সহ-সভাপতি সভায় সভাপতিত্ব করেন। বছরে কমপক্ষে ৪টি সভা অনুষ্ঠানের বিধান রয়েছে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সভার কোরাম গঠিত হয়।

বিপিপিএ- এর দায়িত্ব ও কার্যাবলি:

অন্যান্য দায়িত্ব ও কার্যাবলীর মধ্যে অথরিটির উল্লেখযোগ্য কার্যাবলী হলো-

(১) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত নীতি, কৌশল ও আইনি কাঠামো প্রণয়ন;

(২) বিপিপিএ এর পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক নীতি প্রণয়ন;

(৩) বিপিপিএ এর উন্নয়ন সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন;

(৪) বিপিপিএ এর সামগ্রিক কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান;

(৫) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত আইনের প্রতিপালন নিশ্চিতকরণ, পরিবীক্ষণ, সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধান;

(৬) পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮ এবং Bangladesh e-Government Procurement (e-GP) Guidelines এর প্রয়োজনীয় সংশোধনী প্রস্তাব আনয়ন;