ই-গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি)
20/02/2025 12:00 AM
ই-গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) হলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (বিশেষত ইন্টারনেট) সম্মিলিত ব্যবহার, যা সরকারি সংস্থাগুলি ও সরকারি ক্রয়ের অন্যান্য অংশীজনদের মাধ্যমে সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়া চক্রের (GPPC) সকল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়। এর মাধ্যমে পণ্য, কার্য ও সেবা সংগ্রহের ক্ষেত্রে ক্রয় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বৃদ্ধি করা হয়।
ই-জিপি একটি ওয়েব-ভিত্তিক সিস্টেম, যা সম্পূর্ণ ক্রয় প্রক্রিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং সকল ক্রয় কার্যক্রমের রেকর্ড সংরক্ষণ করে। এই ব্যবস্থার উদ্দেশ্য হলো সকল সরকারি সংস্থার ক্রয় সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পূর্ণ ও হালনাগাদ রাখা এবং দেশি ও বিদেশি সম্ভাব্য দরদাতাদের জন্য দরপত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করা।
ই-জিপি’র ওয়েব ঠিকানা: https://www.eprocure.gov.bd
ই-জিপি’র লক্ষ্য হলো সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি সমন্বিত ই-জিপি সমাধানের মাধ্যমে সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাপনার দক্ষতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করা।
ই-জিপি সিস্টেম দুটি পর্যায়ে বাস্তবায়িত হয়েছে:
১. ই-টেন্ডারিং: এটি সম্পূর্ণ ই-টেন্ডারিং প্রক্রিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করে, যার মধ্যে রয়েছে:
কেন্দ্রীভূত ব্যবহারকারী নিবন্ধন, বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা (APP) প্রস্তুতি, দরপত্র/প্রস্তাবনা প্রস্তুতি, দরপত্র আহ্বান, দরপত্র নথি বিক্রয় (e-TD), অনলাইন প্রাক-দরপত্র সভা পরিচালনা, দরপত্র/প্রস্তাবনার জামানত গ্রহণ, অনলাইন দরপত্র/প্রস্তাবনা দাখিল, দরপত্র খোলা ও মূল্যায়ন, নেগোসিয়েশন (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ও চুক্তি স্বাক্ষর।
২. ই-কন্ট্রাক্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (e-CMS): এটি সম্পূর্ণ চুক্তি ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করে, যেমন: কার্যপরিকল্পনা প্রস্তুতি ও দাখিল, মাইলস্টোন নির্ধারণ, অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ ও নজরদারি, অতিরিক্ত কার্যাদেশ জারি, প্রতিবেদন তৈরি, গুণমান নিশ্চিতকরণ, চলমান বিল প্রস্তুতি, iBAS++ এর মাধ্যমে বিল পরিশোধ, সরবরাহকারী/ঠিকাদার মূল্যায়ন ,সমাপ্তি সনদ প্রদান
পূর্বতন সেন্ট্রাল টেকনিক্যাল ইউনিট (CPTU) ই-জিপি সিস্টেম তৈরি করেছে। ২ জুন ২০১১ সালে ই-জিপি পোর্টাল উদ্বোধন করা হয়। ই-জিপি সিস্টেম তৈরিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা ব্যবহার করা হয়েছে এবং এটি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ অনুসারে প্রণীত হয়েছে।
সরকার সিপিটিইউকে ২০২৩ সালে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (BPPA)তে রূপান্তরিত করেছে।
বাংলাদেশ ই-গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) ব্যবস্থা একটি বিস্তৃত আন্তঃসংযুক্ত মডিউলসমূহ নিয়ে গঠিত, যা নিম্নলিখিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে:
১. কেন্দ্রীভূত নিবন্ধন (ঠিকাদার/সরবরাহকারী/পরামর্শক, প্রকিউরমেন্ট সংস্থা ও অন্যান্য অংশীজন)
২. ওয়ার্কফ্লো ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম
৩. ই-টেন্ডারিং (ই-প্রকাশনা/ই-বিজ্ঞাপন, ই-জমাদান, ই-মূল্যায়ন, ই-চুক্তি স্বাক্ষর)
৪. ই-কন্ট্রাক্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (e-CMS)
৫. ই-পেমেন্টস
৬. প্রকিউরমেন্ট ব্যবস্থাপনা তথ্য ব্যবস্থা (PROMIS)
৭. সিস্টেম ও নিরাপত্তা প্রশাসন
৮. ত্রুটি ও ব্যতিক্রমসমূহ পরিচালনা
৯. অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের সহায়তা
ই-জিপি নির্দেশিকা পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৬ [অধ্যায় ৮, ধারা ৬৫(১)] এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ [অধ্যায় ১২৮(১)] অনুযায়ী অনুমোদিত হয়েছে। BPPA ২০১১ সালে LGED, RHD, BWDB, এবং REB-সহ নির্বাচিত সংস্থাগুলোর মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ই-জিপি বাস্তবায়ন করে। ২০১২ সাল থেকে এটি বাংলাদেশ সরকারের সকল ক্রয়কারী সংস্থার মধ্যে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।