News

Title : সকলের সহযোগিতায় দেশকে অনন্য উচ্চতায় নিতে সরকার সচেষ্ট: আইএমইডি সচিব
Description :

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব জনাব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, দেশের প্রত্যেক নাগরিক উন্নয়নের অংশীদার। সরকার সকলের যোগ্যতায় দেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে কাজ করছে। এ জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।

২ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ই-জিপি বিষয়ক এক সচেতনতামূলক কর্মশালা প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ) এ কর্মশালার আয়োজন করে । বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ডিজিটাইজিং ইমপ্লিমেন্টেশন মনিটরিং অ্যান্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (ডিম্যাপ) প্রকল্পের আওতায় বিপিপিএ-র পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সেন্টার ফর কমিনিউকেশন প্রোগ্রামস্ (বিসিসিপি)’র ব্যবস্থাপনায় এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

মাঠ পর্যায়ে ই-জিপি বিষয়ক সমস্যা চিহ্নিতকরণ, তার সমাধানের জন্য পরামর্শ, ই-জিপির অগ্রগতি ও সফলতা অবহিতকরণ বিষয়ে এ সচেতনতামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিপিপিএ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো. শোহেলের রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক জনাব কামরুল হাসান ও পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

সচিব বলেন, ২০১১ সালের ২ জুন ই-জিপি সিস্টেম চালু হয়ে আজ অনেক দূর এগিয়েছে। সবকিছুরই এখন অগ্রগতি হবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি নির্দেশনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “যেসব প্রতিষ্ঠান ই-জিপির মাধ্যমে ঠিকাদারী কাজ করেন তারা যেন বছরে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা কিংবা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার অংকের বেশী আর কাজ করতে না পারেন তা কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি”।

সচিব বলেন, “ই-জিপি চালু হওয়ার আগে আমরা দেখেছি অনেক সময় টেন্ডার নিয়ে মারামারি এবং মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যে কারণে তখন টেন্ডার করার সময় পুলিশ বাহিনীকে দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। সেটি এখন আর নেই। পুলিশ এখন অন্য কাজে সময় দিচ্ছে।”

তিনি বলেন, “বর্তমান এডিপিতে প্রকল্পের সংখ্যা ১ হাজার ৪০০। এগুলো মনিটরিং করা খুবই চ্যালেঞ্জের বিষয়। যে কারণে আমাদেরকে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তথ্য নিতে হয়। এরপরেও আমাদের লোকজন মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কাজ করে। কাজটি সহজ করার জন্য আমরা ই-পিএমআইএস চালু করেছি”।

তিনি ঠিকাদারদের উদ্দশ্যে বলেন, “আপনাদের সঙ্গে কথা বলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সমস্যাগুলো কোথায় তা চিহ্নিত করা, কারণ আমাদের সবার উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশের কল্যাণ করা। ঢাকায় বসে আর সমস্যা নির্ধারণ করা যাবে না। আজকের এই কর্মশালায় অনেক সমস্যার কথা উঠে এসেছে।”

বিপিপিএ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব শোহেলের রহমান চৌধুরী উন্মুক্ত প্রশ্ন-উত্তর পর্ব পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, “ই-জিপিতে আমরা অনেক এগিয়েছি। যে কারণে বিশ্বের অনেক দেশ আমাদেরকে মূল্যায়ন করে।”

ই-জিপি থেকে সরকার প্রতিবছর ৪০০ কোটি টাকা রাজস্ব অর্জন করে। এর মাধ্যমে দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে ই-জিপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দেশের মোট সরকারি ক্রয়ের ৬৫ ভাগই এখন ই-জিপির মাধ্যমে হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৩৭ হাজার ব্যবহারকারী ই-জিপি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ নিয়েছে।

জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে বলেন, “আজকের কর্মশালায় অনেক মতবিনিময় হয়েছে। আমরা সবাই কোনো না কোনোভাবে ই-জিপির সঙ্গে যুক্ত। ২০১১ সালে শুরু হওয়া ই-জিপি সিষ্টেম সরকারি ৯০ ভাগ সরকারি দপ্তরে কার্যকর হয়েছে। আজকে যেসব কথাগুলো এখানে উত্থাপন হয়েছে এবং নোট নেয়া হয়েছে, আশা করি সেগুলোর বাস্তবায়ন হবে।”

পুলিশ সুপার (এসপি) জনাব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, “আজকের এই কর্মশালায় এসে অনেক অজানা তথ্য জানার সুযোগ হয়েছে এবং অনেকগুলো বিষয় স্পষ্ট হয়েছে। কারণ এই কাজে আমরাও যুক্ত। ই-জিপি’র ফলে সবচাইতে বেশি উপকৃত হয়েছে পুলিশ বিভাগ। কারণ আগে টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজে পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। অনেক দপ্তর পুলিশের  সহায়তা চাইতো। টেন্ডার বাক্স ছিনতাই হওয়ার মতো অনেক ঘটনাই ঘটেছে। আমার মতে এখন ই-জিপিতে যেন কোনো সিন্ডিকেট না থাকে। সিন্ডিকেট ভাঙা দরকার। এক আইডি ব্যবহার করে যেন একাধিক প্রতিষ্ঠান থেকে টেন্ডারে অংশগ্রহণ করতে না পারে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে যারা যুক্ত তারা অনেকেই রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত। যে কারণে এই পদ্ধতি করতে গিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের চাপের মধ্যে থাকতে হয়। এসব সমস্যাগুলো থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।”

বিসিসিপি’র প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ডা. জিনাত সুলতানা ই-জিপি সংক্রান্ত উপস্থাপনা পেশ করেন। কর্মশালায় ই-জিপি কী এবং এর অগ্রগতি বিষয়ে সংক্ষিপ্ত দুটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।

কর্মশালায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রকৌশলী, অফিস প্রধান, সাংবাদিক, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রধানরা উপস্থিত থেকে ই-জিপি পদ্ধতির সুবিধা, সফলতা ও সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে বক্তব্য তুলে ধরেন।

এ সময় চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জনাব মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জনাব বশির আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) জনাব এ.এস.এম. মোসা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জনাব ইমরান শাহারীয়ার, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি জনাব এএইচএম আহসান উল্লাহ এবং সাধারণ সম্পাদক জনাব আল-ইমরান শোভন উপস্থিত ছিলেন।

 

 

Publication Date : 04/12/2023